অজানা গভীরতা: নীরব সংকেত
সাগর গবেষক ডক্টর রহমান তাঁর সাবমেরিনে বসে গভীর সমুদ্রের দিকে নামছিলেন। যন্ত্রপাতির একটানা গুঞ্জন ছাড়া আর কোনো শব্দ নেই। প্রায় ৫ হাজার মিটার নিচে নেমে এসেছেন তাঁরা। এই অঞ্চলকে বলা হয় "মিডনাইট জোন", যেখানে সূর্যের আলো পৌঁছায় না। শুধু সাবমেরিনের শক্তিশালী আলোয় দেখা যাচ্ছে চারপাশের অদ্ভূত অন্ধকার।
রহমানের দল একটি নতুন ধরণের সিসমিক অ্যাক্টিভিটি (ভূমিকম্পের মতো কম্পন) খুঁজে পেয়েছে, যা সাধারণ টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ার সাথে মিলছে না। এটি সমুদ্রের এক অজানা গভীরতা থেকে আসছে, যা মানচিত্রেও নেই।
"স্যার, সিগনালটা আরও তীব্র হচ্ছে," ভয়েস এলো সাবমেরিনের ভেতর থেকে। তরুণ বিজ্ঞানী রিনা, যিনি ডেটা মনিটর করছিলেন, তাঁর মুখে উদ্বেগের ছাপ।
রহমান স্ক্রিনের দিকে তাকালেন। অস্বাভাবিক প্যাটার্নের সিগনাল, যা কোনো পরিচিত প্রাকৃতিক ঘটনা নয়। "আরও নিচে নামো, সাবা। ধীরে ধীরে।" সাবমেরিনের পাইলট সাবা সতর্কতার সাথে সাবমেরিনকে আরও গভীরে নিয়ে গেলেন।
৬ হাজার মিটার, ৭ হাজার মিটার… চাপ ক্রমশ বাড়ছিল। সাবমেরিনের কাঠামো যেন চিড়বিড়িয়ে উঠছিল। রিনা আবার বলে উঠলো, "স্যার, একটা বিশাল কাঠামো! sonar-এ ধরা পড়ছে। এটা প্রাকৃতিক মনে হচ্ছে না।"
রহমান নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। স্ক্রিনে একটি বিশাল, সুষম আকৃতির বস্তুর রেখা ফুটে উঠেছে, যা সমুদ্রের তলদেশে দাঁড়িয়ে আছে। এটির উচ্চতা প্রায় ১ কিলোমিটার, যা একটি ছোট পাহাড়ের সমান!
"কেউ কি কোনোদিন এর কথা শুনেছে?" রহমান বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন।
"না স্যার। কোনো রেকর্ড নেই। এর আগেও এই এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে, কিন্তু এত গভীরে কেউ নামেনি," উত্তর দিলো রিনা।
https://ojanapothe.blogspot.com/2025/06/redmi-note-8-464-price-in-bangladesh.html
তারা আরও কাছে যেতে লাগলেন। সাবমেরিনের হেডলাইটের আলোয় অস্পষ্টভাবে দেখা গেল সেই বিশাল কাঠামো। এটি কোনো পাথর বা প্রবাল নয়। এটির পৃষ্ঠ মসৃণ এবং ধাতব মনে হচ্ছিল। তাতে অদ্ভুত কিছু চিহ্ন খোদাই করা আছে, যা কোনো পরিচিত ভাষার সাথে মেলে না।
হঠাৎ করে সাবমেরিনের সব যন্ত্র বিকল হয়ে গেল। আলো নিভে গেল, শব্দ থেমে গেল। ঘুটঘুটে অন্ধকার আর নীরবতা।
"কী হলো?" রহমানের কণ্ঠে আতঙ্ক।
"কিছুই কাজ করছে না, স্যার। মনে হচ্ছে বাইরে থেকে কোনো শক্তিশালী ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পালস আঘাত করেছে," সাবা হতাশ হয়ে বললো।
তারা সাবমেরিনের ভেতর আটকা পড়ে গেল। অক্সিজেনের মাত্রা কমতে শুরু করলো। সময়ের সাথে সাথে ভয় গ্রাস করতে লাগলো তাদের। সেই বিশাল, অজানা কাঠামোটি নীরব প্রহরী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, যেন তাদের আগমনকে স্বাগত জানাচ্ছে।
কয়েক ঘণ্টা পর, যখন তারা প্রায় আশা ছেড়ে দিচ্ছিলেন, তখন হঠাৎ সাবমেরিনের লাইট জ্বলে উঠলো। যন্ত্রগুলো আবার কাজ করা শুরু করলো। কিন্তু এবার স্ক্রিনে শুধু সেই কাঠামোটি নয়, তার পাশ থেকে কিছু হালকা আলো ফুটে উঠলো। সেই আলোয় দেখা গেল কিছু আবছা আকৃতি, যা দ্রুত ছুটে আসছিল তাদের দিকে।
সেগুলো মাছ নয়, বা অন্য কোনো পরিচিত সামুদ্রিক প্রাণীও নয়। সেগুলোর শরীর থেকে আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছিল, এবং তারা সাবমেরিনের চারপাশে ঘিরে ধরলো। তারপর, এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো। সাবমেরিনের ভেতরে একটা ক্ষীণ শব্দ ভেসে এলো – যেন দূর থেকে কোনো সুর বাজছে। সেই সুরটা মনে হচ্ছিল তাদের মনের গভীরে প্রবেশ করছে, কিছু অজানা কথা বলতে চাইছে।
রহমান চোখ বন্ধ করলেন। তিনি বুঝতে পারছিলেন, এই অজানা গভীরতায় তারা এমন কিছুর মুখোমুখি হয়েছেন, যা মানুষের ধারণার অতীত। এই নীরব সংকেত কি কোনো বার্তা, নাকি নিছকই এক রহস্য? তাদের ভবিষ্যৎ কী, তা কেবল সময়ই বলতে পারবে।